বান্ধবীর সাথে অভিমান করে ‘চিঠি লিখে’ চলে গেলেন সাথী

অনলাইন ডেস্ক প্রকাশিত: ১১ নভেম্বর, ২০১৯

অনলাইন ডেস্ক:

‘প্রিয় তারমিন। আজ আমি তোমার কাছ থেকে অনেক দূরে চলে গেলাম। জানি না আমার কথা তোমার মনে পড়বে নাকি। আমার ভালবাসা তোমাকে আমার কথা মনে করাবে। আমার স্মৃতিগুলো তোমার চোখের উপরে ভাসবে। জানো তারমিন কোনদিন আমি তোমার ভুল বুঝি নাই। কারণ আমি তোমায় ভালবাসি। কোনদিন যদি কোনো অপরাধ করি তাহলে ক্ষমা করো।’

এভাবেই বান্ধবীর কাছে চিঠি লিখে গলায় ফাঁস দিয়ে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলায় স্কুলপড়ুয়া ছাত্রী সাথী আক্তার (১২) আত্মহত্যা করেছে।

রোববার দুপুরে উপজেলার রাঙ্গাবালী ইউনিয়নের পূর্ব নেতা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ওইদিন দুপুরে ঘটনাস্থল থেকে সাথীর লাশ ও আত্মহত্যার আগে লিখে যাওয়া চিঠি উদ্ধার করেছে পুলিশ।

সাথী ওই গ্রামের শহিদুল ইসলামের মেয়ে। সে সালেহা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।

আত্মহত্যার আগে বান্ধবী তারমিনের কাছে লিখে যাওয়া ওই চিঠিতে সাথী আরও লিখেছে, ‘আমার জন্য যদি তোমার মনে কোনো কষ্ট পেয়ে থাকো তাহলে আমায় ভুলে যেও না। জানো তোমাকে দেবার মতো আমি কিছু রেখে যাইনি, শুধু রেখে গেছি আমার স্মৃতি আর এই চিঠি। আমার জন্য দোয়া করবে, যেন অন্য কোনো বন্ধুকে পেয়ে এই সাথীর নাম তোমার মন থেকে মুছে দিও না। আমি জানি সুবু আমায় অনেক ভালবাসে। তবুও তুমি যখন বলতে সুবু তোকে ভালবাসে না, আমি তোমার সঙ্গে সঙ্গে বলতাম। কিন্তু এই সাথীর মন থেকে কোনোদিন বলিনি যে ও আমায় ভালোবাসে না। অভিমান করে বলছি। তুমি যাতে খুশি হও। তাই বলছি। আমি তোমার চোখের সামনে থেকে চলে গেছি। তাতে কি তোমার মনের মাঝে আছি। আমি তোমার সঙ্গে দেখা করতে আসবো। সুবুর জন্য একটা চিঠি লিখছি। আমার তথ্য বইয়ের মধ্যে। প্লিজ ওকে দেবে। প্লিজ। ইতি তোমার বান্ধবী সাথী।’

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রোববার দুপুর ১টায় পরিবারের অগোচরে নিজ ঘরের মধ্যে ওড়না দিয়ে ফাঁস দিয়ে সাথী আত্মহত্যা করে। পরে পরিবারের লোকজন সাথীর লাশ ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে আহাজারি শুরু করলে প্রতিবেশীরা ছুটে আসে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে।

এ ব্যাপারে রাঙ্গাবালী থানার ওসি আলী আহম্মেদ বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য সাথীর লাশটি উদ্ধার করেছি। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে চিরকুট পাওয়া গেছে। আত্মহত্যার কারণ উদঘাটনের জন্য তদন্ত চলছে।

Sharing is caring!

আরও সংবাদ

error: Content is protected !!