• ঢাকা
  • সোমবার, ২২শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৯ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৫ নভেম্বর, ২০১৯
সর্বশেষ আপডেট : ৫ নভেম্বর, ২০১৯

হাজীগঞ্জে কোচিং ফি না দেয়ায় ও পড়া না পাড়ার অজুহাতে ২ ছাত্রীকে বেদম পিটালো শিক্ষক, হাসপাতালে ভর্তি

অনলাইন ডেস্ক
[sharethis-inline-buttons]

নিজস্ব প্রতিনিধি॥
হাজীগঞ্জের কাপাইকাপ ইসলামিয়া সিনিয়র মাদরাসার ২ শিক্ষার্থী কোচিং ফি না দেয়ায় ও পড়া না পাড়ার অজুহাতে তাদের বেত দিয়ে বেদম পিটিয়ে মারত্মক আহত করেছে শিক্ষক। এ ঘটনায় আহত ওই দুই শিক্ষার্থীর পরিবার মারত্মক আহত অবস্থায় তাদেরকে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। ৩ নভেম্বর সকালে মাদরাসায় এ ঘটনা ঘটলেও নির্যাতনের ভয়ে মূখ খোলেনি ওই শিক্ষার্থী। বাড়ীতে এসে তারা অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তাদেরকে হাসপাতালে নেয়া হয়।
মাদরাসা সুপার ওই অভিযুক্ত শিক্ষক আব্দুল হালিমকে কারণ দর্শনানের নোটিস করেছেন বলে তিনি মুঠোফোনে জানিয়েছেন। আহতরা হলো, ওই মাদরাসার ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী লোধপাড়া গ্রামের শহীদ উল্যাহ ও নূরে আলমের মেয়ে। বর্তমানে আহত দুই ছাত্রী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নারী ও শিশু ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই ছাত্রীরা জানায়, সকালে আমরা শ্রেণি কক্ষের সামনে খেলতে ছিলাম। এ সময় আব্দুল হালিম হুজুর এসে আমাদের কাছে কোচিংয়ের টাকার কথা জিজ্ঞেস করে। পরে পড়া না পাড়ার অযুহাতে আমাদের প্রচ-ভাবে বেত দিয়ে মারতে থাকে। তারা আরো জানায়, আমরা আগের দিন মাদরাসায় না যাওয়ায় পূর্বের দিন কি পড়িয়ে ছিলো জানিনা। এটা বলার পর আরো বেশী মারে।
এতে তারা দু’জন অসুস্থ হয়ে পড়লে ওইদিন বিকেলে তাদেরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়।
হাসপাতালে আহত ২ ছাত্রীর মা জানান, কোচিং টাকা সময় হলে দিয়ে দি। কখনো একটু দেরি হয়। এজন্য হুজুর এতো মারতে পারেনা। পড়া না পারার কারণে হুজুররা মারে কিন্তু টাকার জন্য কোন শিক্ষক কি এভাবে মারতে পারে। এরা তো মেয়ে মানুষ। তাদেরকেতো বিয়ে দিতে হবে।
ছাত্রীদের পরিবার আরো জানান, এদিন (রোববার) বিকেলেই মাদরাসার অধ্যক্ষ ও অভিযুক্ত শিক্ষকসহ অন্য শিক্ষকেরা হাসপাতালে এসে তাদের চিকিৎসার খোঁজ-খবর নেন এবং অভিযুক্ত শিক্ষক ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
মাদরাসার অধ্যক্ষ এটিএম আব্দুল হাই জানান, মাদরাসার পক্ষ থেকে আহত দুই ছাত্রীর চিকিৎসার খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে এবং অভিযুক্ত শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিস দেয়া হয়েছে। নোটিসের জবাব পেলে পরবর্তীতে পরিচালনা পর্ষদের সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
মাদরাসার সভাপতি মো. শাহাজাহান জানান, ওই শিক্ষককে মাদরাসা চাকুরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান মুঠোফোনে জানান, তদন্ত পূর্বক অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আহত দুই ছাত্রীর চিকিৎসার খোঁজ-খবর নেয়ার জন্যে মাদরাসা কর্তৃপক্ষকে ইতিমধ্যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, এ মাদরাসার আরবি বিভাগের শিক্ষক আব্দুল জলিল ২০১০ সালের ৩ আগস্ট ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় মেয়েটি সন্তানসম্ভবা হলে বিষয়টি জানাজানি হয়। পরে জাতীয় আইনজীবী সমিতি মেয়েটিকে আইনগত সহায়তা দেয়। অভিযুক্ত শিক্ষককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও নগদ এক লাখ টাকা অর্থদণ্ডের রায় দিয়ে ছিলো আদালত।

Sharing is caring!

[sharethis-inline-buttons]

আরও পড়ুন

  • শিক্ষা এর আরও খবর
error: Content is protected !!