• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯
সর্বশেষ আপডেট : ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

অবশেষে কচুয়ায় নিখোঁজের ১২ ঘন্টা পর অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধু উদ্ধার

অনলাইন ডেস্ক
[sharethis-inline-buttons]

ওমর ফারুক সাইম, কচুয়া॥
কচুয়ায় মুন্নি বেগম (২৫) নামের ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধু নিখোঁজের ১২ ঘন্টা পর উদ্ধার করেছে কচুয়া থানা পুলিশ। কচুয়া উপজেলার পশ্চিম সহদেবপুর ইউনিয়নের দারাশাহী তুলপাই গ্রামের সৌদি প্রবাসী কামালের স্ত্রী কচুয়া পৌরসভার পলাশপুরের মাতৃছায়া নীড়ের মাহবুবের বাড়ির তৃতীয় তলায় ফ্ল্যাট ভাড়া করে বসবাস করছিল। রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাত আনুমানিক ১ টায় ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধু মুন্নির প্রসব ব্যাথা শুরু হলে সে তার প্রবাসী স্বামীকে বিষয়টি মুঠোফোনে জানায়। রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকালে মুন্নির বোনসহ পরিবারের লোকজন তার বাসায় এসে বাহির থেকে দরজা বন্ধ অবস্থায় দেখতে পায়। দরজা খুলে ভিতরে প্রবেশ করে মুন্নিকে তারা বাসার কোথাও দেখতে পাওয়া যায়নি । এসময় ঘরের মেঝে ও বাথরুমে রক্ত দেখতে পায় তারা। বাসার আসবাবপত্র এলোমেলো অবস্থায় পরে থাকতে দেখা যায়। মুন্নির ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ থাকার কারনে তার সাথে যোগাযোগও করতে পারছে না পরিবারের লোকজন। তাকে আশেপাশের সকল ক্লিনিক ও হাসপাতালে খুঁজেও পাওয়া যায়নি।
সংবাদ পেয়ে কচুয়া সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার শেখ রাসেল ও কচুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ ওয়ালী উল্লাহ (অলি) সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে অন্তঃসত্ত্বার বাসা পরিদর্শন করেন। এবং মুন্নির পাশের ফ্ল্যাটের লোকজন ও বাড়ির মালিকের স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে।
পরবর্তীতে মুন্নির খোঁজে অভিযান চালায় কচুয়া থানা পুলিশ। কচুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ ওয়ালীউল্লাহর (অলি) নির্দেশে সাব ইন্সপেক্টর (এসআই) শিমুল পলাশপুর এলাকার বিভিন্ন বাড়িতে সন্ধান নিয়ে জানতে পারে ওইদিন সকাল ৭ টা থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধু মুন্নি পলাশপুর মমিনের বাড়িতে অবস্থান করে। পরবর্তীতে মমিন ও তার পরিবারকে না জানিয়ে মুন্নি মমিনের বাড়ি ত্যাগ করে। মমিন অনেক খুঁজাখুঁজি করেও মুন্নিকে পায়নি। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় কচুয়া থানার পুলিশ মুন্নির বাবার বাড়ি পথপুর গ্রামের লোকজন সূত্রে লোকজন জানতে পারে মুন্নি তার বাবার বাড়িতে অবস্থান করছে। এবং সূত্রের সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ মুন্নির বাবার বাড়িতে গিয়ে মুন্নিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। এবং বর্তমানে মুন্নি কচুয়া টাওয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মুন্নির বোন, মমিন এবং মমিনের স্ত্রীকে আটক করে কচুয়া থানা পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মুন্নির সাথে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। মুন্নি প্রতিবেদককে বলেন, তার বাসার মেঝেতে কিভাবে রক্ত আসলো, আসবাবপত্র কিভাবে এলোমেলো হলো ও তিনি কিভাবে মমিনের বাসায় গেলেন এবং কিভাবে তার বাবার বাড়িতে গেলেন এ ব্যাপারে কিছুই মনে করতে পারছেন না। মমিনের সাথে তার কোন সম্পর্ক আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন মমিনকে আমি ছিনিই না। মমিন ও তার স্ত্রীর সাথে কথা হলে তারা জানায় সকালে কাজের উদ্দেশ্যে মমিনের স্ত্রী বাসা থেকে চলে যায়। মমিন ও তার দুই সন্তান বাসায় ছিল। অসুস্থ অবস্থায় মুন্নি তাদের বাসায় এসে অবস্থান করে এবং মানবিক দৃষ্টি কোনে মমিন মুন্নিকে তার বাসায় থাকতে দেয়।
মুন্নির পরিবারের লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায় মুন্নি মানসিকভাবে অসুস্থ এবং মুন্নির পরিবারের দাবী কয়েক বছর পূর্বে মুন্নির উপর জ¦ীনের আসর হয়। তারপর থেকেই মুন্নি মাঝেমাঝে উল্টাপাল্টা আচরণ করে কিন্তু কখনো এমন ঘটনা ঘটেনি।
এব্যাপারে কচুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ ওয়ালী উল্লাহ (অলি) এ প্রতিবেদকে বলেন, মুন্নিকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য কচুয়া টাওয়ার হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। মুন্নি বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছে এবং মুন্নি সুস্থ হলে মুন্নিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। ঘটনার তদন্ত চলছে তন্তদ রিপোর্ট অনুযায়ী আমরা আইনআনুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

Sharing is caring!

[sharethis-inline-buttons]

আরও পড়ুন

error: Content is protected !!