• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১০ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ২০ আগস্ট, ২০১৯
সর্বশেষ আপডেট : ২০ আগস্ট, ২০১৯

চাঁদপুরে গৃহবধু হত্যার স্থান নিয়ে জটিলতায় মামলা হতে দেরি, ঘাতক স্বামী পলাতক

অনলাইন ডেস্ক
[sharethis-inline-buttons]

মো. মহিউদ্দিন আল আজাদ॥
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার হাটিলা পূর্ব ইউনিয়নের বেলঘর গ্রামের এক গৃহবধুকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গৃহবধুর স্বামী মাসুদ হোসেন এ হত্যাকা-ের জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। সোমবার দুপরে নিহত গৃহবধুর স্বামী মাসুদ হোসেন তার লাশ চাঁদপুর সদর হাসাপাতালে রেখে পালিয়ে যায়।
খবর পেয়ে চাঁদপুর সদর থানার পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। নিহত গৃহবধুর নাম সুমি আক্তার (২০)। সুমি হাজীগঞ্জ পৌরসভাধীন কংগাইশ গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেনের মেয়ে।
সুমি মারা যাওয়ার স্থান নিয়ে চাঁদপুর সদর ও হাজীগঞ্জ থানার মধ্যে দ্বন্ধ দেখা দেয়ায় এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত এখনো মামলা দায়ের করা হয়নি। চাঁদপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাছিম উদ্দিন বলছেন, ঘটনার স্থান সুমির স্বামীর বাড়ি হাজীগঞ্জ উপজেলার বেলঘর গ্রামে। আর হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন জানান, সুমি তার স্বামী মাসুদকে নিয়ে চাঁদপুর সদরের বাবুরহাট এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। সেখানেই ঘটনা ঘটেছে।
সুমির পারিবারিক সূত্রে জানাগেছে, ফেণী জেলার ইসমাইল হোসেনের সাথে ৪ বছর আগে সুমির প্রথম বিয়ে হয়। বিয়ের পর তারা হাজীগঞ্জ পৌরসভার টোরাগড় এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন। তাদের আড়াই বছর বয়সি একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। টোরাগড় গ্রামে ভাড়া বাসায় থাকা অবস্থায় একই উপজেলার বেলঘর গ্রামের মাসুদের সাথে পরকীয়ার সম্পর্কে জড়িয়ে তারা পালিয়ে বিয়ে করেন। বিয়ের পর তারা চাঁদপুর সদরের বাবুরহাট এলাকায় ভাড়া বাসায় উঠেন।
সুমির বাবা জাহাঙ্গীর হোসেন অভিযোগ করে বলেন, মাসুদের সাথে বিয়ের পর কারণে অকারণে মেয়েকে নির্যাতন করা হতো। পরে সুমি ঢাকায় চলে যায়। সেখানে একটি গার্মেন্টেস কারখানায় চাকুরি নেয়। ১৬ আগস্ট সুমি মাসুদের কাছে ফিরে আসে এবং পুনরায় বাবুরহাটের বাসায় উঠে।
সুমির মা আমেনা বেগম জানান, সোমবার দুপরে মাসুদ তাকে ফোন করে সুমি অসুস্থ এবং সদর হাসপতালে ভর্তি হয়েছে বলে জানায়। হাসপাতালে গিয়ে সুমিকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পায়। তবে এর আগেই মাসুদ পালিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর সুমি মারা যায়। আমেনা বেগম বলেন, ঢাকা থেকে ফেরার পর মাসুদ তার মেয়েকে বেদম মারধর করেন।
সুমির মৃতদেহের সুরতহাল তৈরি করেন চাঁদপুর সদর থানার এসআই জয়নাল আবেদিন। জয়নাল আবেদিন জানান, তার মাথায় ও শরীরে বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। হত্যার আগে তাকে বিষ খাওয়ানো হয়েছে অথবা নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে সে বিষপান করতে পারে। এ ঘটনায় কি ধরনের মামলা হবে জানতে চাইলে জয়নাল আবেদিন বলেন, ঘটনারস্থান নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়ায় এখনো মামলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়নি।
চাঁদপুর সদর থানার ওসি নাছিম উদ্দিন বলে, ছেলেটির বাড়ী বেলঘর গ্রামে। বেলঘর গ্রামটি হাজীগঞ্জ উপজেলায় পড়েছে। ঘটনাটি সম্ভবত: বেলঘর এলাকায় ঘটেছে। কিন্তু হাজীগঞ্জ থানা থেকে বলা হচ্ছে সদর থানার বাবুরহাট এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। বাবুরহাট এলাকায় ঘটনার স্থান খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা। যে কারণে মামলা নিতে দেরি হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, ঘটনারস্থান নির্ধারন না করে মামলা নিলে ভবিষ্যতে মামলাটি ক্ষতিগ্রস্থ হবে।
হাজীগঞ্জ থানার ওসি আলমগির হোসেন বলেন, ঘটনারস্থান নির্ধারণের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাজীগঞ্জ) সার্কেল আফজাল হোসেন ও থানার এসআই মোশারফ হোসেন বেলঘর গ্রামে গিয়ে মাসুদের বাড়ীতে খোঁজ খবর নিয়েছেন। এলাকাবাসি জানিয়েছে মাসুদ দীর্ঘ দিন বাড়ীতে থাকছেনা।

Sharing is caring!

[sharethis-inline-buttons]

আরও পড়ুন

  • চাঁদপুর সদর এর আরও খবর
error: Content is protected !!