• ঢাকা
  • বুধবার, ১৭ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৪ঠা বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১৭ আগস্ট, ২০১৯
সর্বশেষ আপডেট : ১৭ আগস্ট, ২০১৯

বখাটের অত্যাচারে প্রবাসির স্ত্রীর আত্মহত্যা, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেন পুলিশ সুপার

অনলাইন ডেস্ক
[sharethis-inline-buttons]

মো. মহিউদ্দিন আল আজাদ:
শাহরাস্তিতে বখাটের অত্যাচারে ক্ষোভে লজ্জায় ঈদের আগের দিন (১২ আগস্ট) বিকেলে নিজ ঘরে ফাঁসি দিয়ে প্রবাসির স্ত্রী জান্নাতুন নাঈমের মৃত্যুর ঘটনায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পুলিশ সুপার জিহাদুল কবির। ঘটনার পরে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে বখাটে হাসানকে আসামী করে শাহরাস্তি থানায় মামলা দায়ের করেছে নিহত জান্নাতুন নাঈমের শাশুড়ী পারুল বেগম। তবে এখনো বখাটে হাসান আটক হয়নি।

নিহতের শশুর বাড়ীর লোকজনের সাথে কথা বলে জানাযায়, শাহরাস্তি উপজেলার ওয়ারুক পাটওয়ারী বাড়ীর সৌদিপ্রবাসি তৌকির আহমেদ প্রায় ৪ বছর পূর্বে প্রেম করে বিবাহ করে একই ইউনিয়নের রাড়া গ্রামের মশিউর রহমানের মেয়ে জান্নাতুন নাঈমকে। বিয়ের কয়েক বছর পরেই জীবিকার তাগিদে সৌদি চলে যায় তৌকির।

কোরবানি ঈদের আগের দিন রবিবার দুপরে জান্নাতুন নাঈমের শাশুড়ী হাজীগঞ্জ বাজারে ঈদের কেনাকাটা করতে আসলে পুত্রবধু জান্নাত দুপরে গোসল খানায় গোসল করতে যায়। গোসলের সময় একই বাড়ীর হারুন পাটওয়ারীর বখাটে ছেলে হাছান (২২) গোসল খানার ফাঁক দিয়ে জান্নাতের গোসলের দৃশ্য দেখে। এর পূর্বেও বখাটে হাছান জান্নাতকে কয়েকবার উত্যক্ত করতো বলে অভিযোগ করেন জান্নাতের শাশুড়ী পারুল বেগম। এ ঘটনা জান্নাত গোসল করে বের হওয়ার পর বখাটে হাছান জান্নাতকে গোসলের সময় গোসল খানার সব দৃশ্য দেখে ফেলছে বলে জানিয়ে বিভিন্ন বাজে কথা বলে তাকে ঝাঁপড়িয়ে ধরে। বিষয়টি জান্নাত তার প্রবাসি স্বামী তৌকিরকে বিষয়টি অবহিত করে। তোমাদের বাড়ীর হাছান ছেলেটি খুবই নোংরা ও খারাপ। দেশে এসে তার বিচার করো। এ কথা বলেই লাইন কেটে দেয়। কিছুক্ষণ পরে নিজ ঘরের আড়ার সাথে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে।

এর পর তার স্বামী সৌদি আরব থেকে কয়েকবার ফোন করলেও ফোন রিসিভ না হওয়ায় তৌকির তার চাচীকে ফোন করে। চা”ী তাদের ১১ বছরের মেয়ে সুরভীকে ঘরে পাঠিয়ে জান্নাতকে ডেকে আনতে বলে, সুরভী ঘরের জানালার ভাঙ্গা দিয়ে ঘরে ডুকে জান্নাতের রুমে গিয়ে দেখে জান্নাত ফাঁসিতে ঝুলে রয়েছে। তার চিৎকারে বাড়ীর অন্যান্যরা মিলে গলার ফাঁস কেটে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।

ঘটনাটি হাজীগঞ্জ থানায় জানানো হলো ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে শাহরাস্তি থানাকে অবহিত করে। শাহরাস্তি থানার এসআই মোজাম্মেল এসে জান্নাতের মৃতদেহ সুরতহাল শেষে ময়না তদন্তের জন্য চাঁদপুর মর্গে প্রেরণ। ঈদের দিন সোমবার বাদ আসর নিহত জান্নাতের জানাযা শেষে তাকে পারিবারিক কবর স্থানে দাফন করা হয়েছে। নিহত জান্নাতুন নাঈম চাঁদপুর সরকারি কলেজের অনার্সে পড়–য়া শিক্ষার্থী।

জান্নাতের শাশুড়ী পারুল বেগম নতুনেরকথা’কে জানান, আমি আমার ছেলের বৌকে আমার সাথে বাজারে আসতে বলেছিলাম, সে গোসল না করায় আমি আমার ঝাঁ সহ বাজারে আসি। বাজার করার শেষ পর্যায়ে আমার ঝা’র ফোনে ফোন আসে আমার ছেলে বৌ ফাঁসি দিয়েছে। কিসের মধ্যে কি ঘটলো আমিতো কিছুই জানিনা। এ সময় তিনি বিলাপ করে বলেন, আমাদের বাড়ীর হাছান আমার ছেলে বৌকে বিভিন্ন সময় উত্ত্যক্ত করতো।

শাহরাস্তি থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহআলম নতুনেরকথাকে জানান, এ ঘটনায় নিহত জান্নাতুল নাঈমের শাশুড়ী পারুল বেগম বখাটে হাছানকে অভিযুক্ত করে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। আসামীকে ধরার জন্য অভিযান চলছে। নিহত জান্নাতুল নাঈমের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

শনিবার সকালে পুলিশ সুপার জিহাদুল কবির ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে মুঠোফোনে নতুনেরকথাকে জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও এলাকাবাসির সাথে কথা বলে বুঝা যায় এটা সুইসাইড। তার পরেও ময়নাতদন্তে সব বেরিয়ে আসবে।

তিনি বলেন, আমরা তদন্ত করছি, আরো তদন্ত করা হবে। আসামী হাসানকে ধরার জন্য আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে।

Sharing is caring!

[sharethis-inline-buttons]

আরও পড়ুন

  • শাহরাস্তি এর আরও খবর
error: Content is protected !!