• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১৭ জুন, ২০১৯
সর্বশেষ আপডেট : ১৭ জুন, ২০১৯

হাজীগঞ্জ পাতানিশ-নোয়াপাড়ার ২ কিলোমিটার সড়ক পাকা না হওয়ায় কয়েক হাজার মানুষের সীমাহীন দূর্ভোগ

অনলাইন ডেস্ক
[sharethis-inline-buttons]

নিজস্ব প্রতিনিধি ॥
হাজীগঞ্জ উপজেলার ১১নং পশ্চিম হাটিলা ইউনিয়নের পাতানিশ নোয়াপাড়া ২ কিলোমিটার সড়ক না থাকায় গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে সীমাহীন দূর্ভোগ পোহাচ্ছেন। বর্ষাকালে সড়কে বৃষ্টির পানি জমে এমনভাবে কাদার সৃষ্টি হয় দেখে মনে হবে চষা ক্ষেত। এটি সংস্কারের জন্য এলাকাবাসি দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, এমপি’র কাছে দাবী জানিয়ে আসলেও কেউই তাদের দাবীর প্রতি ভ্রুক্ষেপ করছেনা। আর সড়কে চলাচল করতে গিয়ে দূর্ঘটনায় অনেক পথচারীদের হাত-পা ভেঙ্গে পঙ্গু হচ্ছে।
এলাকার স্থানীয়রা জানান, হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তির নির্বাচনীয় এলাকার সাংসদ মেজর অব. রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম এমপি তিনি নিজেও নির্বাচনকালী পাতানিশ নোয়াপাড়া ২ কিলোমিটার সড়কটি পাকা করণ করে দিবে বলে কথা দিয়েছেন। কিন্তু তার পরও কেন এ পাতানিশ নোয়াপাড়া ২ কিলোমিটার হচ্ছে না তা আমাদের জানা নেই।
পাতানিশ থেকে নোয়াপাড়া গ্রামের শেষ পর্যন্ত সড়কটি প্রায় দুই কিলোমিটার অংশ সেই প্রথম থেকেই বেহাল অবস্থা। সড়কটিতে চলতে গিয়ে প্রতিদিন নাকাল হতে হচ্ছে এ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের।
আবার সামান্য বৃষ্টি হলেই খানাখন্দে ভরা সড়ক দুটিতে পানি জমে যায়। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন চলাচলরত সাধারণ মানুষ ও স্কুল কলেজে যাওয়া আশা শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি বেহাল এই সড়কে প্রায়ই স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা চলাচলের সময় খানা-খন্দে পড়ে তাদের জামা-কাপড় নষ্ট করছে। গত দিনের টানা বর্ষণে এই ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে।
এলাকার কৃতি সন্তান বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোশাররফ হোসেন মজুমদার স্বপন জানান, ‘ভাঙা এ সড়কে প্রতিদিনই আমাদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। পথচারীদের দুর্ভোগের পাশাপাশি আমাদের ভোগান্তি হচ্ছে ব্যবসা-বাণিজ্যে। ব্যবসায়ী স্বপন মজুমদার আরো বলেন, এই সড়কটি খুব দ্রুত বাস্তবায়ন করা হোক, তার জন্য আমরা হাজীগঞ্জ শাহরাস্তির এলাকার সাংসাদ মেজর অব. রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম এর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
হাবিলদার মো. সালামত উল্যাহ জানান, আমাদের এ গ্রামের বেহাল সড়কে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি হয় রোগীদের। বিশেষ করে অ্যাম্বুলেন্সে যেসব রোগী আসেন তাঁদের যন্ত্রণা অনেকাংশে বাড়িয়ে তোলে। কাচাঁ বেহাল সড়কে সবচেয়ে বেশি কষ্ট হয় অন্তঃসত্ত্বা নারীদের। কারণ, জরুরি মুহূর্তে অথবা গুরুতর অবস্থায় অ্যাম্বুলেন্সে বা কোন সিএনপি করে তাঁদের হাসপাতালে আনতে হয়। সে সময়ে কোন অ্যাম্বুলেন্স বা সিএনসি ডুকানো যায় না, এছাড়াও অন্য রোগীদেরও দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
হাজীগঞ্জ মডেল সরকারী কলেজের শিক্ষার্থী জেসমিন বলেন, প্রতিদিন আমাদের এই সড়ক দিয়ে কলেজে যাতায়াত করতে হয়। আসা-যাওয়ার সময় যখনই এই পথটুকুর কথা মনে পড়ে, তখনই মনটা খারাপ হয়ে যায়। বিরক্তি আর তিক্ত অভিজ্ঞতা এখানে আমাদের। আমাদের স্থানীয় সাংসদ দুই বার আমাদের এলাকায় এসে এ সড়কটি করে দিবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, কিন্তু আজও তা করা হয়নি। আমাদের এ এলাকার শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউপি চেয়ারম্যান যদি সাময়িক ইটের খোয়া-বালু ফেলে সংস্কার করায় আপাতত কিছুটা ভোগান্তি কমবে বলে আশা করছি।
৭ নং ওয়ার্ড স্থানীয় ইউপি সদস্য সোলাইমান মাস্টার, গত ৩ বছর পূর্বেও এ সড়কের কাজটি জন্য প্রায় ১ কোটি ৩৭ লক্ষ টাকা বাজেট হয়। কিন্তু কাজটি সঠিক সময়ে না করার জন্য আমাদের এ বাজেটটি ফেরত গিয়েছে। এতো মধ্যে আমরা দু বার আমাদের সাংসদকে জানিয়েছি, তিনিও আমাদেরকে আশ^াস দিয়েছেন আমাদের এ দু কিলোমিটার সড়ক করে দিবেন। সরজমিনে দেখা যায়, পাতানিশ-নোয়াপাড়া সড়কটির উপর এ গ্রামের লোকজন নিভর্রশীল। এলাকার লোকজন এ সড়ক দিয়েই যাতায়ত করে থাকে। শুধু তাই নয় ওই এলাকার স্কুল-কলেজগামী ছাত্র-ছাত্রীরাও এ সড়কের উপর নিভর্রশীল। সর্বোপরি এলাকার কৃষকরা তাদের উত্পাদিত ধান-পাটসহ অন্যান্য পণ্য বাজারজাত করতে এ সড়ক দিয়েই বিভিন্ন স্থানে প্রেরণ করতে হয়। এ ছাড়া বিকল্প কোন রাস্তা নেই। ফলে কৃষকরা ধানসহ অন্যান্য পণ্য বাজারজাত করতে মারাত্মক অসুবিধায় পড়ছে। হাজীগঞ্জ উপজেলার ১১ নং পশ্চিম হাটিলা ইউনিয়নের পাতানিশ নোয়াপাড়া থেকে কৃষকরা প্রতি মৌসুমে হাজার হাজার মণ ধান হাজীগঞ্জ বাজারসহ বিভিন্ন হাট বাজারে বিক্রি করে থাকে। ওই কৃষিপণ্য নেবার একমাত্র পথ এ সড়ক। সড়কটি পুরো দু কিলোমিটার অংশ সবটুকুই কাঁচা। চলতি বর্ষা মৌসূমে সড়কটির এমন অবস্থা হয়েছে যে, যানবাহন তো দূরের কথা পায়ে হেঁটেই চলাচল করা অসম্ভব। কাদার গর্তে পিছলে পড়ে প্রায়ই পথচারীরা হাত-পা ভাঙ্গাসহ মারাত্মক আঘাত পেয়ে থাকে। সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও এলাকাবাসির ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা এ সড়কের উপর নিভর্রশীল বিপুল জনগোষ্টির দুর্দশা লাঘবে কোন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছেনা। এমতাবস্থ্ায় সড়কটি পাকা করে এলাকাবাসির ভোগান্তি দুর করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ আবশ্যক।

Sharing is caring!

[sharethis-inline-buttons]

আরও পড়ুন

  • হাজীগঞ্জ এর আরও খবর
error: Content is protected !!