• ঢাকা
  • শনিবার, ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৩০ মে, ২০১৯
সর্বশেষ আপডেট : ৩০ মে, ২০১৯

চট্টগ্রাম কারাগারে শীর্ষ সন্ত্রাসী অমিত মুহুরী খুন

অনলাইন ডেস্ক
[sharethis-inline-buttons]

অনলাইন ডেস্ক:

চট্টগ্রামকেন্দ্রী কারাগারের ভেতরে ১৫ মামলার আসামি অমিত মুহুরী(৩৪) খুন হয়েছেন।

বুধবার রাত ১২টার দিকে কারাগারের ৩২ নম্বর সেলে এ ঘটনা ঘটে বলে কারাগার সূত্রে জানা গেছে।

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার নাছির আহমেদ রাত ২টার দিকে যুগান্তরকে বলেন, ‘একটি সেলে অমিত মুহুরীসহ তিনজন হাজতি ছিলেন। তাদের মধ্যে রিপন নাথ নামে একজন হাজতিঅমিত মুহুরীকে মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করে। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে তাকে উদ্ধার করে রাত ১টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়। এরপর রাত দেড়টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’

অমিত মুহুরী চট্টগ্রামের রাউজান পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ডা. মনোরঞ্জন মুহুরী চেয়ারম্যানবাড়ির অজিত মুহুরীর ছেলে।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মো. আমিনুল হক সরকার রাত ২টার দিকে যুগান্তরকে বলেন, রাতে কারাগার থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় অমিত মুহুরী নামে একজন হাসপাতালে আনা হয়। তার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়। পরে তিনি মারা যান।

২০১৭ সালের ১৩ আগস্ট চট্টগ্রম নগরের এনায়েতবাজার এলাকার রানীরদিঘি এলাকা থেকে একটি ড্রাম উদ্ধার করে পুলিশ। প্রথমে বোমা রয়েছে ভাবা হলেও ড্রাম কেটে ভেতরে লাশ উদ্ধার করা হয়। লাশ গলে যাওয়ায় তখন পরিচয় বের করা যায়নি।

পরে এ ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে ৩১ আগস্ট ইমাম হোসেন ও শফিকুর রহমান নামের দুজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে তারা পুলিশকে জানান, ড্রামের ভেতরে পাওয়া লাশটি অমিতের বন্ধু নগর যুবলীগের কর্মী ইমরানুল করিমের।

৯ আগস্ট নগরের নন্দনকানন হরিশ দত্ত লেনের নিজের বাসায় ইমরানুলকে ডেকে নেন অমিত মুহুরী। এরপর বাসার ভেতরেই তাকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় ২০১৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর অমিতকে কুমিল্লার একটি মাদক নিরাময় কেন্দ্র থেকে গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেফতার করে।

কে এই অমিত মুহুরী: অমিত মুহুরী এসএসসি পাস করে গ্রামের একটি বিদ্যালয় থেকে। শহরে এসে ত্রাস হয়ে ওঠে অমিত মুহুরী। কথায় কথায় গুলি ছোড়া ও ছুরি মারা তার অভ্যাসে পরিণত হয়। তুচ্ছ ঘটনায় ঘনিষ্ঠ বন্ধুর বুকে ছুরি চালাতেও হাত কাঁপে না তার। পুলিশের চোখে সে ‘ঠান্ডা মাথার ভয়ঙ্কর খুনি’। অন্তত অর্ধডজন হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন তিনি। তার বিরুদ্ধে নগরীর বিভিন্ন থানায় এক ডজন চাঁদাবাজি, অস্ত্র ও হত্যা মামলা রয়েছে।

এসএসসি পাস করে রাউজান পৌরসভার সুরেশ বিদ্যায়তন থেকে। এরপর চট্টগ্রাম শহরে এসে ওমর গণি এমইএস কলেজে ভর্তি হলেও উচ্চ মাধ্যমিকের গন্ডি পেরোতে পারেনি। এরপর ক্রমে হয়ে ওঠে পেশাদার খুনি। পরিচয় দেন যুবলীগ নেতা হিসেবে।

নন্দনকানন, লাভলেন, হেমসেন লেন, ঝাউতলা, লালদীঘিপাড়, মোমিন রোড ও এনায়েতবাজার এলাকায় দোর্দণ্ড প্রতাপ ছিল তার।

যেভাবে উত্থান:অমিত মুহুরীর উত্থান ২০১২ সালের দিকে। তার সবচেয়ে কাছের বন্ধু রাসেলকে হত্যার মধ্য দিয়ে। সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০১২ সালে নগরের মোমিন রোডের ঝাউতলা এলাকার যুবলীগ কর্মী মো. রাসেলের সঙ্গে পরিচয় হয় অমিত মুহুরীর। দুজনের মধ্যে গড়ে উঠে সখ্য। একপর্যায়ে নারীঘটিত বিষয় নিয়ে দুজনের বন্ধুত্বে ফাটল ধরে।

এর জেরে অমিত মুহুরীকে মারধর করেন রাসেল। পরে প্রতিশোধ নিতে অমিত মুহুরী তার সহযোগীদের নিয়ে রাসেলকে তুলে নিয়ে যায়। আগ্রাবাদের জাম্বুরি মাঠে নিয়ে বেধড়ক পেটায়। শরীরে ব্লেড দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে তাকে নিপীড়ন করে।

একপর্যায়ে মৃত মনে করে মাঠে ফেলে যায় তারা। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় রাসেলকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয়। এক মাস নগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর তার মৃত্যু হয়।

Sharing is caring!

[sharethis-inline-buttons]

আরও পড়ুন

  • সারা দেশ এর আরও খবর
error: Content is protected !!